
সুইচ কি, সুইচ কি কাজে ব্যবহৃত হয়?
সুইচ একইসাথে যেমন অনেকগুলি কম্পিউটারকে সংযোগ করতে পারে ঠিক তেমনি কম্পিউটার এর সাথে প্রিন্টার, ফাইল স্টোরেজ, সার্ভার এবং অন্যান্য তথ্য-প্রযুক্তি যন্ত্রের ও সংযোগে সহায়তা করে।

Tanvir Hossain
Writer
PUBLISHED ONMar 09, 2024
নেটওয়ার্ক সুইচ এমন একটি ডিভাইস যা একই সাথে অনেকগুলো কম্পিউটারকে একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে পারে এবং তাদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান প্রদান করতে সহায়তা করে। সুইচ মূলত হার্ডওয়্যার ডিভাইস যা নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থাকে নিয়ন্ত্রন করে। সুইচ একইসাথে যেমন অনেকগুলি কম্পিউটারকে সংযোগ করতে পারে ঠিক তেমনি কম্পিউটার এর সাথে প্রিন্টার, ফাইল স্টোরেজ, সার্ভার এবং অন্যান্য তথ্য-প্রযুক্তি যন্ত্রের ও সংযোগে সহায়তা করে।
একটি নেটওয়ার্ক সুইচ।
Buy switch from here.
সুইচের প্রকারভেদ
নেটওয়ার্ক সুইচ বিভিন্নরকম এর হয়ে থাকে। তবে কিছু সুইচ রয়েছে যা সাধারণত আমরা ব্যাবহার হতে দেখি নিয়মিত।
KVM সুইচ
অনেকগুলো কম্পিউটার এর সাথে কিবোর্ড, মনিটর, মাউস ইত্যাদি সংযোগ করার জন্য এ ধরনের সুইচ ব্যাবহার করা হয়। অনেকগুলো সার্ভারকে একত্রে নিয়ন্ত্রণ করা এবং তার এর ঝামেলা এড়াতে এ ধরনের সুইচ প্রায়শই ব্যাবহার করা হয়। কোন একজন ব্যক্তিকে যদি একাধিক কম্পিউটার নিন্ত্রন করতে হয় তবে KVM সুইচের মাধ্যমে একটি কনসোল দিয়েই সবগুলো কম্পিউটারকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এ ক্ষেত্রে কিবোর্ডকে প্রোগ্রাম করা হয় যাতে শুধুমাত্র একটি সুইচ এর মাধ্যমেই বিভিন্ন কম্পিউটার এর নিয়ন্ত্রণ নেয়া যায়। তাছাড়াও KVM সুইচে এক্সটেনশন ক্যাবল দিয়ে প্রায় ১০০ ফিট দুরত্ব পর্যন্ত DVI, VGA বা HDMI সিগন্যাল প্রেরন করা যায়। KVM সুইচ থাকার ফলে পুরো একটি সার্ভারকে নিয়ন্ত্রন ও রক্ষানাবেক্ষন করা সহজ হয়ে যায়।
Managed সুইচ
এ ধরনের সুইচ কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পুরো নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার সক্ষমতা প্রদান করে। ম্যানেজেড সুইচ দিয়ে সংযুক্ত কম্পিউটার গুলোর মধ্যে তথ্য স্থানান্তর এর পরিমান হয় সর্বোচ্চ। এ ধরনের সুইচ গিগাবাইট স্ট্যান্ডার্ড ইথারনেট সংযোগ ব্যাবস্থাপনায় বেশি ব্যাবহার হয়।
বেশিরভাগ ম্যানেজড সুইচ ব্যাবস্থা নিয়ন্ত্রনকারী ভর্চুয়াল লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক তৈরি করে যা নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকা প্রতিটি ডিভাইসকে কন্ট্রোল করার ক্ষমতা প্রদান করে। ম্যানেজড সুইচ নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থা যদিও খরুচে, কিন্ত এই নেটওয়ার্ক যুক্ত ডিভাইস সমূহ তথ্য আদান-প্রদানে সর্বোচ্চ ইফিসিয়েন্সি পেয়ে থাকে যা কর্মঘন্টা বাচায়।
Unmanaged সুইচ
সাধারনত এ ধরনের সুইচে শুধুমাত্র ডিভাইস সংযোগ করেই ব্যাবহার শুরু করে দেয়া যায় এবং শুধুমাত্র একটি ইথারনেট ক্যাবল ছাড়া আর তেমন কিছুই প্রয়োজন হয় না। Unmanaged সুইচ নিজে নিজেই তার সাথে সংযুক্ত কম্পিউটার গুলোর মধ্যে তথ্য স্থানান্তর এর জন্য সর্বোচ্চ গতির নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থা ( হাফ / ফুল ডুপ্লেক্স মোড) বেছে নিতে পারে। বেশিরভাগ আনম্যানেজড সুইচ এ কোন ডিভাইস এর এক্সেস নেয়ার জন্য সশরীরে সুইচ বোর্ডে পরিবর্তন করতে হয়। তবে দাম কম এবং নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষনাবেক্ষন খরচ কম হওয়ায় সাধারণত এ ধরনের সুইচ ব্যাবহার করাই শ্রেয়।
Smart সুইচ
অতি পরিচিত এবং বহুল ব্যাবহৃত একটি নেটওয়ার্ক সুইচ হলো Smart Switch. অথবা এ সুইচকে বলা যায় বুদ্ধিবৃত্তিক সুইচ। স্মার্ট সুইচ ম্যানেজড সুইচ এর ই একটি সংস্করণ যা শুধুমাত্র কিছু সিলেক্টেড সিস্টেম ব্যাবহার করে। Managed সুইচ এর মতো অনেক গুলো ফাংশন ও কঠিন সিস্টেমিক অপারেশন এর বদলে Smart সুইচ কিছু নির্দিষ্ট ফাংশন ও সহজ অপারেশন এর মাধ্যমে কোন নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থাকে ব্যাবহারের সুযোগ দেয়। যদি কোন নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থার পুরোটাই নিজের মতো করে ফাংশনাল করে ব্যাবহার করতে হয় তবে Smart সুইচ হবে প্রথম পছন্দ। এ ধরনের সুইচ Managed সুইচ থেকে দামেও কম হয়ে থাকে।
PoE সুইচ
PoE- Power Over Ethernet। এ দ্বারা বুঝানো হয় কোন নেটওয়ার্কে যদি PoE সুইচ ব্যাবহার করা হয় তবে একই সাথে সংযুক্ত ডিভাইস গুলোতে যেমন তথ্য আদান-প্রদান করবে তেমনি প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক শক্তিও এই PoE সুইচ সরবরাহ করতে পারবে। অর্থাৎ নেটওয়ার্কে যুক্ত কম্পিউটার, লাইটিং সিস্টেম, আইপি ক্যামেরা, রাউটার এই সব গুলোই নিজেদের কাজ চালাতে পারবে সরাসরি কোন বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়া শুধুমাত্র PoE সুইচ সংযুক্ত থাকার ফলে। PoE সুইচ দিয়ে ইথারনেট এর মাধ্যমে কোন অফিস বা হোম নেটওয়ার্ক তৈরি করা যায় বাইরের কোন বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়াই।
হাব কী?
হাব বলতে বুঝানো হয় কোন কিছুর সেন্ট্রাল একটা জায়গা। নেটওয়ার্ক এ হাব বলতে এমন একটি ডিভাইসকে বুঝানো হয় যেখানে একইসাথে একের অধিক কম্পিউটার সংযোগ করা যায়। হাবকে রিপিটারও বলা হয়। এদের মূলত কোন একটি লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) এর মূলবিন্দুতে রাখা হয় এবং তথ্য আদান-প্রদান এর জন্য সংযোগকারী হিসেবে ব্যাবহার করা হয়। এখন জানা যাক:
একটি হাব
হাব এবং সুইচ এর মধ্যে পার্থক্য
হাব এবং সুইচ এর মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। হাব একটি প্যাসিভ ডিভাইস যার শুধুমাত্র চারটি পোর্ট থাকে এবং শুধুমাত্র কম্পিউটারকে একে অপরের সাথে সংযোগ করে। তাছাড়া হাব এর মধ্যে দিয়ে তথ্য স্থানান্তর হয় সর্বোচ্চ 10Mbps গতীতে এবং হাফ ডুপ্লেক্স ট্রান্সমিশন মোড ব্যাবহার করে। অন্যদিকে সুইচ একটি অ্যাক্টিভ ডিভাইস যার মধ্যে 24-48 টি পোর্ট থাকে এবং এদের দিয়ে বিভিন্ন কম্পিউটার সংযোগ ও ম্যানেজ করার সুবিধা থাকে। সুইচ এর তথ্য স্থানান্তর এর গতি 10-100 Mbps পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং ফুল ডুপ্লেক্স ট্রান্সমিশন মোড ব্যাবহার করে। এবার আসা যাক
হাবের পরিবর্তে সুইচ ব্যাবহার এ কি সুবিধা পাওয়া যায়
সুইচ মূলত হাব এর থেকে বেশি কার্যকর, কারন সুইচ ব্যাবহার করে একত্রে অনেকগুলো কম্পিউটার একত্রে সংযোগ করা যায় যেখানে প্রতিটি কম্পিউটার এর আলাদা এড্রেস থাকে। যখনই কোন তথ্য আদান-প্রদান করা হয় তখন সেই নির্দিষ্ট কম্পিউটারে তথ্য পৌছায় ফলে সুইচ ব্যাবহার এ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। তাছাড়া হাব ব্যাবহার হয় মূলত অনেকগুলো কম্পিউটারকে একটি নেটওয়ার্কে যুক্ত করার জন্য। হাব এর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে তথ্য স্থানান্তর এর গতিও অনেক কম। কিন্ত সুইচ যেহেতু অনেকগুলো কম্পিউটারকে একত্রে নিজেদের মধ্যে সংযুক্ত করে এবং একটি নেটওয়ার্ক এর আওতায় আনে, তাই এদের মধ্যে তথ্য স্থানান্তর এর গতিও উচ্চ। সহজভাবে সুইচ তথ্য স্থানান্তর এর গতি বারায়, নেটওয়ার্ক এর নয়েস কমায়, তথ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে এবং একটি স্ট্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থা সৃষ্টি সহজ করে বলে হাবের পরিবর্তে সুইচ ব্যাবহার করা হয়।
Share
More Blog Articles

Mar 04, 2024
রোবট এবং রোবটিক্স : বিস্ময়কর এক যান্ত্রিক রাজ্য
রোবটিক্স যদিও একটি শব্দ, কিন্ত কখনো কি চিন্তা করেছেন ছোট একটি শব্দে কত বিশাল একটি যান্ত্রিক পৃথিবী লুকিয়ে আছে! রোবটিক্স শব্দটি শোনলেই আমাদের মনের ভেতর একটা অন্য রকম অনুভূতি তৈরি হয়।
READ MORE

Mar 03, 2024
মডেম এর আদ্যোপান্ত
মডেম এর প্রধান কাজ তথ্য কে ডিজিটাল ও এনালগ সিগনাল এ রুপান্তর করা। এরা একই সাথে মডুলেশন এবং ডিমডুলেশন করতে পারে। মডেম মূলত একই সাথে বিভিন্ন চ্যানেল এ যুক্ত ডিভাইস সমূহে তথ্য প্রেরন করতে পারে।
READ MORE

Mar 05, 2024
ডায়োড : ডিজিটাল প্রযুক্তির ভিত্তি
ডায়োড মূলত ছোট আকারের বৈদ্যুতিক একটি যন্ত্র। এদের ব্যাবহার করা হয় বিপরীতমুখী তড়িৎ প্রবাহ রোধ এর জন্য। ডায়োড এর একপ্রান্ত নিম্ন রোধ ও অন্য প্রান্ত উচ্চ রোধ বিশিষ্ট হয়।
READ MORE