এনকোডার কাকে বলে ও কী?
এমনভাবে ডিজাইন করা একটি সার্কিট যা মানুষ বুঝে বা বলতে পারে এমন ভাষাকে ইনপুট হিসেবে নিয়ে কম্পিউটার যাতে বুঝতে পারে এমন একটি যান্ত্রিক ভাষায় রুপান্তর করে। অর্থাৎ এনকোডার ডিজিটাল ডাটাকে এনালগ সিগন্যালে রুপান্তর করে।
Tanvir Hossain
Writer
PUBLISHED ONMar 15, 2024
এনকোডার কাকে বলে
এমনভাবে ডিজাইন করা একটি সার্কিট যা মানুষ বুঝে বা বলতে পারে এমন ভাষাকে ইনপুট হিসেবে নিয়ে কম্পিউটার যাতে বুঝতে পারে এমন একটি যান্ত্রিক ভাষায় রুপান্তর করে। অর্থাৎ এনকোডার ডিজিটাল ডাটাকে এনালগ সিগন্যালে রুপান্তর করে। এনকোডার ইনপুট হিসেবে যদি যে পরিমান তথ্য নিতে পারে এবং আউটপুটে যে পরিমান তথ্য পরিবর্তিত করতে পারে এ ইনপুট ও আউটপুটের সংখ্যাকে ২n দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এখানে আউটপুট সংখ্যা n এবং ইনপুট সংখ্যা ২n।
এনকোডার বলতে কি বুঝায় তা আমরা জেনে নিলাম, এবার ডিকোডার নিয়েও কিছুটা আইডিয়া করা যায়। তাহলে
ডিকোডার বলতে কি বুঝায়?
ডিকোডার মূলত এনকোডার এর উলটো কাজ করে। মানুষ কোন কিছু ইনপুট দিলে কম্পিউটার তা অনুযায়ী কাজ করে এবং উত্তর হিসেবে আরেকটি তথ্য-উপাত্ত প্রদান করে। কিন্ত তা হয় কম্পিউটার এর বোধগম্য ভাষায়। এই যান্ত্রিক ভাষাকে মানুষের বোধগম্য ভাষায় রুপান্তর করাই ডিকোডার নামক সার্কিট এর কাজ। অর্থাৎ ডিকোডার কম্পিউটার এর আউটপুট এনালগ সিগন্যালকে ডিকোড করে ডিজিটাল সিগন্যালে রুপান্তর করে। ডিকোডার n সংখ্যক ইনপুটকে ২n সংখ্যক আউটপুটে রুপান্তর করে।
এনকোডার বলতে কি বুঝায়, ডিকোডার কাকে বলে তা আমরা জানলাম৷ এনকোডার এবং ডিকোডার নিয়ে আলোচনায় আরেকটি অংশের নাম ও আসে, তা হলো অ্যাডার। কিন্ত
অ্যাডার কাকে বলে
অ্যাডার কি এই প্রশ্নের উত্তর শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। আমরা কোন কিছু যোগ করলে বলি অ্যাড করা। অ্যাডার ও ঠিক একই কাজ করে। অর্থাৎ অ্যাডার এমন একটি সার্কিট যা মূলত বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির যোগ এর কাজ করে। অ্যাডার দুই বিট এর তথ্যকে একত্রিত করে একটি বিট এর মাধ্যমে আউটপুট দিতে পারে।
এনকোডার এর প্রকারভেদ
এনকোডার এর কাজ তথ্য-উপাত্তকে কম্পিউটার এর বোধগম্য ভাষায় রূপান্তর করা এবং এই রুপান্তর প্রক্রিয়ায় ইনপুট এবং আউটপুট এর পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে এনকোডারকে নিম্নোক্ত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।
৪:২ লাইন এনকোডার
এ ধরনের এনকোডার এ ইনপুট হিসেবে ৪ বিট বাইনারি তথ্যকে নিয়ে আউটপুট হিসেবে ২ বিট বানারি তথ্যতে পরিবর্তিত করতে পারে। এ ধরনের এনকোডার এর ব্লক ডায়াগ্রাম হবে-
৮:৩ লাইন এনকোডার
এই ধরনের এনকোডার ইনপুট হিসেবে ৮ বিট বাইনারি তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আউটপুটে ৩ বিটের বাইনারি তথ্য উপস্থাপন করতে পারে। এদের ব্লক ডায়াগ্রাম -
ডেসিমাল টু বিসিডি এনকোডার
এদের ১০:৪ লাইন এনকোডার বা অক্টাল টু বাইনারি এনকোডারও বলা হয়ে থাকে। এরা ইনপুটে ১০ বিট বাইনারি তথ্য নিয়ে আউটপুটে ৪ বিট তথ্য উপস্থাপন করে। এদের ব্লক ডায়াগ্রাম -
একটি ব্যাপার অনেকেই এনকোডার এর আলোচনায় গুলিয়ে ফেলে। রোটারি এনকোডারকে এনকোডার সার্কিট এর ধরন মনে করেন অনেকেই। আদতে রোটারি এনকোডার তা নয়।
রোটারি এনকোডার এর কাজ কি?
রোটারি এনকোডার মূলত একধরনের সার্কিট যা তার মধ্যে থাকা নব ঘুরানোর ফলে সে ঘূর্ণন শক্তিকে ডিজিটাল সিগন্যালে রুপান্তর করে। রোটারি এনকোডার ব্যাবহার হয় অটোমেশন ইন্ডাস্ট্রিতে। কনভেয়ার বেল্ট এর স্পিড এবং ঘুরার দিক নিয়ন্ত্রণ করতে এই রোটারি এনকোডার এর ব্যাবহার সবচেয়্ব বেশি দেখা যায়। তাছাড়াও সার্ভো মটর এর নিয়ন্ত্রন, ম্যাকানিক্যাল আর্ম ইত্যাদি এর নিয়ন্ত্রনেও রোটারি এনকোডার এর ব্যাবহার হতে দেখা যায়।
একটি রোটারি এনকোডার
ডিকোডার এর প্রকারভেদ
ডিকোডার কম্পিউটার এর কোড আকৃতির ভাষাকে মানুষের বুঝতে পারার মতো ভাষায় পরিবর্তিত করে বলে একে কম্পিউটার এর অতি প্রয়োজনীয় সার্কিট বলা যায়। ডিকোডার এর ইনপুট গ্রহন ও আউটপুট প্রদান করার ধরন এর উপর ভিত্তি করে নিম্নোক্ত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।
২ টু ৪ লাইন ডিকোডার
এরা এমন ধরনের ডিকোডার যারা ২ বিট এর বাইনারি তথ্যকে ৪ বিটের বাইনারি তথ্যের সিগন্যালে রূপান্তর করতে পারে। নিচের ব্লক ডায়াগ্রামটি ২ টু ৪ লাইন ডিকোডারকে নির্দেশ করে।
৩ টু ৮ লাইন ডিকোডার
এরা তিন বিটের বাইনারি তথ্যকে নিয়ে ৮ বিটের বাইনারি তথ্যের সিগন্যালে রূপান্তর করে। এদের ব্লক ডায়াগ্রাম-
৪ টু ১৬ লাইন ডিকোডার
৪ বিটের কোন বাইনারি তথ্যকে ইনপুট হিসেবে কম্পিউটার হিসেবে নিয়ে মানুষের বোধগম্য ১৬ বিটের ডিজিটাল সিগন্যালে রুপান্তর করা এই ধরনের ডিকোডার এর কাজ। এদের ব্লক ডায়াগ্রাম -
ডিকোডার কোথায় কোথায় ব্যাবহার হয়
ডিকোডার বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ইলেকট্রনিকস যন্ত্রংশে ব্যাবহার হয়। কিছু সাধারন ও কমন ডিকোডার এর ব্যাবহারক্ষেত্র হলো-
-
মেমোরিঃ RAM/ ROM এ ডিকোডার এর ব্যাবহার পরিলক্ষিত হয়। কোন একটি ম্যামোরিতে কোন তথ্য সংরক্ষন এর জন্য আলাদা ও অভিন্ন ফাইল বা ফোল্ডার ঠিকানা প্রয়োজন হয়। ডিকোডার মূলত আউটপুটে একটি অভিন্ন সিগন্যাল প্রদান করে যা আলাদা ঠিকানা নির্দেশ করে।
-
মাইক্রোপ্রসেসরঃ মাইক্রোপ্রসেসর এর থেকে প্রাপ্ত তথ্য মানুষের বোধগম্য ভাষায় রুপান্তর করে ডিকোডার। ডিকোডারকে মাইক্রোপ্রসেসর এ ব্যাবহার এর আরেকটি কারন ডিকোডার এর ডাটা বাস সিগন্যাল শনাক্তকরন সক্ষমতা।
-
ডিজিটাল ঘড়িঃ বিসিডি ডিকোডার ব্যাবহার করা হয় ডিজিটাল ঘড়িতে যা ঘড়ি থেকে প্রাপ্ত বাইনারি তথ্যকে ডেসিমাল কোডে রুপান্তর করে। প্রতিটি ডেসিমাল ডাটা প্রদর্শন এর জন্য আলাদা বাইনারি তথ্য ডিকোডার ইনপুট হিসেবে নেয়।
-
অডিও এবং ভিডিও ডিকোডারঃ ডিকোডার ডিজিটাল অডিও এবং ভিডিও তথ্যকে এনালগ সিগনালে রুপান্তর করে যা স্পিকার বা স্ক্রিনে প্রদর্শন করা যায়।
Share
More Blog Articles
Mar 04, 2024
রোবট এবং রোবটিক্স : বিস্ময়কর এক যান্ত্রিক রাজ্য
রোবটিক্স যদিও একটি শব্দ, কিন্ত কখনো কি চিন্তা করেছেন ছোট একটি শব্দে কত বিশাল একটি যান্ত্রিক পৃথিবী লুকিয়ে আছে! রোবটিক্স শব্দটি শোনলেই আমাদের মনের ভেতর একটা অন্য রকম অনুভূতি তৈরি হয়।
READ MORE
Mar 03, 2024
মডেম এর আদ্যোপান্ত
মডেম এর প্রধান কাজ তথ্য কে ডিজিটাল ও এনালগ সিগনাল এ রুপান্তর করা। এরা একই সাথে মডুলেশন এবং ডিমডুলেশন করতে পারে। মডেম মূলত একই সাথে বিভিন্ন চ্যানেল এ যুক্ত ডিভাইস সমূহে তথ্য প্রেরন করতে পারে।
READ MORE
Mar 05, 2024
ডায়োড : ডিজিটাল প্রযুক্তির ভিত্তি
ডায়োড মূলত ছোট আকারের বৈদ্যুতিক একটি যন্ত্র। এদের ব্যাবহার করা হয় বিপরীতমুখী তড়িৎ প্রবাহ রোধ এর জন্য। ডায়োড এর একপ্রান্ত নিম্ন রোধ ও অন্য প্রান্ত উচ্চ রোধ বিশিষ্ট হয়।
READ MORE